সীমান্তের খবর ডেস্ক :: ফেনীর ছাগলনাইয়া উপজেলার যশপুর সীমান্ত দিয়ে আরও ১১ নারী-শিশু ও পুরুষকে বাংলাদেশে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।
বুধবার মধ্যরাতে ছাগলনাইয়া উপজেলার যশপুর সীমান্তের ২১৯১ পিলার এলাকা দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে ঠেলে পাঠিয়ে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। খবর পেয়ে রাত দুইটার দিকে যশপুর বিওপির টহল দল মটুয়া এলাকা থেকে তাদের আটক করে।
পুশইন হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে একজন পুরুষ, সাতজন নারী এবং তিনজন শিশু রয়েছে। তাদেরকে বাড়ি- যশোর, নড়াইল ও সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) তথ্যমতে, তারা জীবিকার তাগিদে অবৈধপথে ভারতে গিয়েছিলেন। সম্প্রতি ভারতীয় পুলিশের হাতে আটক হওয়ার পর মঙ্গলবার মুম্বাই থেকে প্রায় ৩৫০ অবৈধ বাংলাদেশিকে বিমানযোগে আগরতলায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে তাদের পুশইন করা হচ্ছে।
ফেনী ৪ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটোনেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন বলেন, “আটককৃতরা অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাদের ছাগলনাইয়া থানায় হস্তান্তর করা হচ্ছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিএসএফের কোম্পানি কমান্ডারকে মৌখিক প্রতিবাদ জানানো হয়েছে এবং প্রতিবাদলিপি প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।”
উল্লেখ্য, গত মে মাসে দুটি পৃথক ঘটনায় একই সীমান্ত এলাকা দিয়ে ৫২ বাংলাদেশিকে পুশইন করেছিল বিএসএফ। ৩০ মে- ছাগলনাইয়া সীমান্ত দিয়ে ১৩ জন এবং ২২ মে- ফুলগাজী ও ছাগলনাইয়া সীমান্ত দিয়ে ৩৯ জন বাংলাদেশিকে পুশ-ইন করে বিএসএফ। তবে, সব ক্ষেত্রেই নাগরিকত্ব নিশ্চিত হওয়ার পর সবাইকে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
সীমান্ত সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ অভিবাসন রোধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। ফলে সম্প্রতি দেশটিতে আটক বাংলাদেশিদের ক্রমাগত ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী দিনগুলোতে এধরনের পুশইনের ঘটনা আরও বাড়তে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা জোরদার এবং সীমান্ত ব্যবস্থাপনায় আধুনিক প্রযুক্তি (বায়োমেট্রিক সিস্টেম) প্রয়োগ জরুরি। এছাড়া, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের “পুশ-ব্যাক” নীতি দীর্ঘদিন ধরে মানবাধিকার সংগঠনগুলোর সমালোচনার কেন্দ্রে ।
জাতিসংঘের মাইগ্রেশন এজেন্সি (IOM) এর মতে, নারী ও শিশুদের জোরপূর্বক ফেরত পাঠানো শরণার্থী সনদ ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের পরিপন্থী।