গঙ্গা চুক্তি নিয়ে আলোচনায় কেন থাকতে চায় পশ্চিমবঙ্গ?

সীমান্তের খবর ডেস্ক : ২০২৬ সালে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে ভারতের গঙ্গা জলবণ্টন চুক্তির পুনঃনবায়ন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে আলোচনায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকেও অন্তর্ভুক্ত করার দাবি তুলেছে রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। দলটির বক্তব্য, যেহেতু গঙ্গা নদী পশ্চিমবঙ্গের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে এবং এই নদীর ব্যবস্থাপনায় রাজ্যের অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত স্বার্থ জড়িত—তাই এই আন্তর্জাতিক চুক্তিতে পশ্চিমবঙ্গকে উপেক্ষা করা সংবিধানবিরুদ্ধ।

একতরফা সিদ্ধান্তের বিরোধিতা-
তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সদস্য ঋতব্রত ব্যানার্জী বলেন, ১৯৯৬ সালের প্রথম গঙ্গা চুক্তির সময়ও পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসুর অনুমোদনের পরই তা কার্যকর হয়েছিল। তিনি অভিযোগ করেন, নতুন চুক্তির প্রস্তুতি চলছে পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দিয়ে, যেটি আন্তর্জাতিক কূটনীতিতে যৌক্তিক হলেও রাষ্ট্রীয়ভাবে অসাংবিধানিক।

তাঁর দাবি, চুক্তির ফলে:

নদীর নাব্যতা কমেছে,
কলকাতা বন্দরের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে,
গঙ্গা ভাঙনে হাজার হাজার মানুষ ঘরহীন হয়েছেন,
সুন্দরবনের পরিবেশগত ভারসাম্য বিঘ্নিত হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য-
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, নদী-নির্ভর আন্তর্জাতিক চুক্তিতে কেন্দ্রীয় সরকারের একচেটিয়া দায়িত্ব থাকলেও, তা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে রাজ্যগুলোর মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কারণ রাজ্যগুলিই মাঠে এর বাস্তব প্রতিক্রিয়া অনুভব করে।

রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সব্যসাচী বসুরায়চৌধুরীর মতে – শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, গঙ্গার ওপর নির্ভরশীল সব রাজ্য যেমন উত্তরপ্রদেশ, বিহার, ঝাড়খণ্ড – তাদেরও এই আলোচনায় যুক্ত করা উচিত।

বাংলাদেশকে জল দেওয়ায় পশ্চিমবঙ্গে কি পরিবর্তন?
তৃণমূল কংগ্রেস সংসদে প্রশ্ন তোলে—বাংলাদেশকে গঙ্গার পানির নিরবিচ্ছিন্ন প্রবাহ দেওয়ার ফলে কি নদীর গতিপথ বদলেছে? মিষ্টি জলের ঘাটতিতে সুন্দরবনের পরিবেশ কি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে?

জবাব হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকার দাবি করে—যথেষ্ট প্রমাণ নেই যে শুধুমাত্র পানিবণ্টনের কারণে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে। তবে স্বীকার করে, শুষ্ক মৌসুমে ফারাক্কার ভাটিতে মিষ্টি জলের ঘাটতি সুন্দরবনের ওপর প্রভাব ফেলেছে।

স্থানীয়দের দুর্ভোগ, পুনর্বাসনের দাবি
মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলার বহু এলাকায় প্রতিবছর নদীভাঙনে বাসিন্দারা ঘরহীন হচ্ছেন। গঙ্গা ভাঙ্গন প্রতিরোধ নাগরিক কমিটির মুখপাত্র তরিকুল ইসলাম বলেন, “বর্তমানে ভাঙন ছড়িয়ে পড়েছে প্রায় সব এলাকায়। কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়কেই দায়িত্ব নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”

তাদের তিনটি দাবি:

স্থায়ী প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা।
ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসন।
ক্ষতিপূরণ প্রদান।

আরও পড়তে এখানে ক্লিক করুন:-

সর্বশেষ সংবাদ

যশোরে ১৭টি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারি আটক

সীমান্তের খবর ডেস্ক: যশোরের নড়াইল-যশোর মহাসড়কের দারাজহাট এলাকায় হাসান ফিলিং স্টেশনের সামনে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ কেজি (১.৯৩৪ কেজি) ওজনের ১৭টি স্বর্ণের বারসহ এক...

যশোরে ১৭টি স্বর্ণের বারসহ এক চোরাকারবারি আটক

সীমান্তের খবর ডেস্ক: যশোরের নড়াইল-যশোর মহাসড়কের দারাজহাট এলাকায় হাসান...

বেনাপোলে ফিল্মি কায়দায় স্কুলছাত্রী অপহরণ, পুলিশের অভিযানে উদ্ধার

শেখ কাজিম উদ্দিন : যশোরের বেনাপোলে অস্ত্র ঠেকিয়ে সপ্তম...

শার্শায় ১২ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি আটক

ফিরোজ আহমেদ : যশোরের শার্শা থানা পুলিশের অভিযানে ১২...

শার্শায়’ বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে লিফলেট বিতরণ

মাসুদুর রহমান শেখ : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান...

ভারত থেকে দেশে ফিরলেন পাঁচারের শিকার বাংলাদেশি নারী সবেদা বেগম

ফিরোজ আহমেদ : : ভারতে পাঁচারের শিকার বাংলাদেশি নারী...

জেরুজালেমে বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত আহত অন্তত সাতজন, এলাকাজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা

সীমান্তের খবর ডেস্ক : জেরুজালেমে ফিলিস্তিনি বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত...

নেপালে জেনজিদের বিক্ষোভে অন্তত ১৩ জন নিহত, কারফিউ জারি ও সেনা মোতায়েন

সীমান্তের খবর ডেস্ক : নেপালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিষিদ্ধের...

বেনাপোলে ভারতীয় ট্রাক থেকে পিস্তল ও গুলিসহ দুই নাগরিক আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেনাপোল স্থলবন্দরের কার্গো ইয়ার্ড থেকে কাঁচামরিচবাহী...
spot_img

Related Articles

Popular Categories

spot_imgspot_img