সামাজিক যোগ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, সম্প্রতি কক্সবাজার জেলার আম ত্যার
বেড়ে চলেছে। অথচ, আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া কোনো সমাধান নয়; বরং সমস্যা তৈরির নতুন পথ। আত্মহত্যা শুধু নিজের জীবনকে ধ্বংস করে না, বরং একটি পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও সমাজকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়।
কোন ধর্মই আত্মহত্যা সমর্থন করে না। ইসলাম ছাড়া অন্যান্য ধর্মেও আত্মহত্যাকারীদের প্রতি তীব্র নিন্দা জানানো হয়ে থাকে।
আত্মহত্যা ভয়ংকর এক সামাজিক ব্যাধি। ইসলাম ধর্মে আত্মহত্যা হারাম ও কবিরা গুনাহ। আত্মহত্যাকারীর গন্তব্য নিঃসন্দেহে জাহান্নাম। তাই দুঃখ-কষ্ট যতই আসুক আল্লাহর দেওয়া জীবন শেষ করার অধিকার কারও নেই।
পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা এ ঘৃণ্য ও কঠিন শাস্তিযোগ্য কাজ থেকে বিরত থাকার আদেশ দিয়েছেন।
আত্মহত্যা সর্ম্পকে মহান আল্লাহ এরশাদ করেন,
‘আর তোমরা নিজেদের হত্যা করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের প্রতি দয়ালু। এবং যে কেউ জুলুম করে, অন্যায়ভাবে তা (আত্মহত্যা) করবে, অবশ্যই আমি তাকে অগ্নিদগ্ধ করবো, আল্লাহর পক্ষে তা সহজসাধ্য।’ (সূরা আন-নিসা, আয়াত: ২৯-৩০)
‘তোমরা নিজেদের হাতে নিজেদের জীবন ধ্বংসের মুখে ফেলো না।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৯৫)
‘অবশ্যই দুঃখের সাথে সুখ আছে।’ (সুরা ইনশিরাহ, আয়াত: ৬)
আত্মহত্যা সর্ম্পকে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন,
‘যে ব্যক্তি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে, জাহান্নামেও তার সেই যন্ত্রণাকে অব্যাহত রাখা হবে। আর যে ব্যক্তি ধারালো কোনো কিছু দিয়ে আত্মহত্যা করবে, তার সেই যন্ত্রণাকেও জাহান্নামে অব্যাহত রাখা হবে।’ (বুখারি, হাদিস: ৪৪৬)
‘যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোনো বস্তু দিয়ে নিজেকে হত্যা করবে, কিয়ামতের দিন তাকে সে বস্তু দিয়েই শাস্তি প্রদান করা হবে।’ (বুখারী: ৫৭০০; মুসলিম: ১১০)
‘নবী করিম (সা.)-এর সামনে এক ব্যক্তিকে আনা হলো, যে নিজেকে তরবারির ফলা দিয়ে মেরে ফেলেছে। ফলে তিনি তার জানাজা পড়লেন না।’ (সহিহ মুসলিম: ২৩০৯)
মানুষের জীবনে হতাশা ও দুঃখ-কষ্ট আসতে পারে। সে জন্য আত্মহত্যা করার কোন যৌক্তিকতা নেই। কাপুরুষ ও ভীরুরাই শয়তানের ফাঁদে পড়ে আত্মহত্যা করে থাকে। কখনো জীবনে হতাশা-বিষন্নতা ও দুঃখ-কষ্ট আসলে ধৈর্য ধারণের মাধ্যমে সমাধান করে নিতে হয়। শয়তানের ফাঁদে পা দিয়ে নিজেকে শেষ করে দেওয়া কোন সমাধান নয়। বরং দুঃসময়ে আল্লাহর দিকে ফিরে আসতে হবে। নিজের গুনাহের জন্য আল্লাহর দরবারে ক্ষমা চাইতে হবে। সুখ-দুঃখের মালিক একমাত্র মহান আল্লাহ।
বিঃদ্রঃ কক্সবাজার জেলার সকল সম্মানিত ইমাম ও খতিব সাহেবকে জুমার প্রাক খুতবা/সুবিধামত সময়ে মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে আত্মহত্যা রোধে এর কুফল সম্পকে পবিত্র কুরআন ও হাদীসের আলোকে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আলোচনা করার জন্য অনুরোধ করা হলো।
