সীমান্তের খবর ডেস্ক: মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের জারি করা বৈশ্বিক শুল্কের বেশিরভাগকে অবৈধ ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সার্কিট আপিল আদালত। আদালত বলেছে, এসব শুল্ক আরোপ জরুরি অর্থনৈতিক ক্ষমতা আইনের (আইইইপিএ) আওতায় অনুমোদিত নয় এবং এটি প্রেসিডেন্টের এখতিয়ারের বাইরে।
সাত–চার ভোটে দেওয়া রায়ে বলা হয়, কর ও শুল্ক আরোপের ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে সংরক্ষিত। ১২৭ পৃষ্ঠার রায়ে আদালত স্পষ্ট করে জানায়, আইইইপিএ কোথাও ‘ট্যারিফ’ বা ‘ডিউটি’র উল্লেখ করেনি। তাই প্রেসিডেন্টের পক্ষে এ আইনের মাধ্যমে শুল্ক আরোপ করা আইনের পরিপন্থী।
এই রায় কার্যকর হবে ১৪ অক্টোবরের পর, যাতে প্রয়োজনে প্রশাসন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারে।
ট্রাম্পের প্রতিক্রিয়া
রায় ঘোষণার পর ট্রাম্প একে তীব্র সমালোচনা করেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যাল-এ তিনি লেখেন,
“এই সিদ্ধান্ত বহাল থাকলে তা যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করবে। শুল্ক তুলে নিলে আমেরিকা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে।”
ট্রাম্প শুল্ক আরোপের যৌক্তিকতা দেখাতে বাণিজ্যে ‘জাতীয় জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা করেছিলেন। তার দাবি ছিল, বাণিজ্য ঘাটতি যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি। তবে আদালত বলেছে, প্রেসিডেন্টের এই ব্যাখ্যা আইনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়।
কোন শুল্কে প্রভাব পড়বে
শুক্রবারের রায়ে শুধু বৈশ্বিক শুল্ক নয়, কানাডা, মেক্সিকো ও চীনের ওপর আরোপিত শুল্কও বাতিল করা হয়েছে। তবে ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের ওপর আরোপিত শুল্ক বহাল থাকছে, কারণ সেগুলো ভিন্ন আইনি ক্ষমতায় আরোপ করা হয়েছিল।
আইনি লড়াই সামনে
এই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের বাণিজ্য নীতিতে বড় ধাক্কা দিলেও, মামলাটি সুপ্রিম কোর্টে গেলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত হতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারণা। বর্তমানে নয় বিচারপতির মধ্যে ছয়জন রিপাবলিকান নিয়োগপ্রাপ্ত, যার মধ্যে তিনজন ট্রাম্পের মনোনীত।
এখন প্রশ্ন উঠছে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক কমানোর চুক্তি যেসব দেশ করেছে, সেসব চুক্তির ভবিষ্যৎ কী হবে। আপিল আদালতের রায়ে ট্রাম্প হেরে গেলেও সর্বোচ্চ আদালতে লড়াইয়ের সুযোগ এখনও খোলা রয়েছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি